আজ শনিবার, ৮ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৩শে নভেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নাজমা রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী কাল

নিজস্ব সংবাদদাতাঃ

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে ভূমিকার জন্য নারায়ণগঞ্জের অগ্নিকণ্যা বলা হতো অধ্যাপিকা নাজমা রহমানকে। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক নাজমা রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী আগামী কাল। ২০১৬ সালের এ দিনে তিনি মারা যান। এর আগে ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলায় আহত হয়েছিলেন তিনি।

১৯৬৮ সালে শহরের মর্গ্যান উচ্চবালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি, ১৯৭০ সালে নারায়ণগঞ্জ মহিলা কলেজ থেকে এইচএসসি, ১৯৭২ সালে একই কলেজ থেকে বিএ এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন নাজমা রহমান। স্কুল জীবন থেকেই ছাত্র ইউনিয়নের রাজনীতিতে যোগ দেন। একই সঙ্গে সাংস্কৃতিক কর্মে জড়িত হন। দেশ স্বাধীনের পর নারায়ণগঞ্জে ‘শাপলা’ নামে একটি সাংস্কৃতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা হলে তিনি এর সঙ্গে যুক্ত হন।

রাজনীতির হাতেখড়ি পান স্বামী বিশিষ্ট সাংবাদিক মুজিবুর রহমান বাদলের কাছ থেকে। ১৯৬৭ সালে দু’জনের বিয়ে হয় । ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, সত্তরের নির্বাচনকালীন ন্যাপের (মোজাফফর) কর্মী হিসেবে ছিলেন সক্রিয়। মুক্তি সংগ্রাম ও স্বাধীনতার আন্দোলনে তার নিত্যদিনের কর্মকান্ড ছিল লক্ষনীয় ।

মুজিবুর রহমান বাদল সত্তর দশকের মধ্যভাগে দৈনিক সংবাদের চিফ রিপোর্টার ছিলেন। আশির দশকের শেষদিকে নারায়ণগঞ্জ থেকে নারায়ণগঞ্জের প্রথম সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘সকাল বার্তা’র সম্পাদক ছিলেন তিনি ।নাজমা রহমান সত্তর দশকে সাংবাদিকতা পেশায় যোগ দেন। ইত্তেফাক ভবনের ‘সাপ্তাহিক পূর্বাণী’ পত্রিকায় তিনি সাংবাদিকা শুরু করেন। সকাল বার্তায়ও সাংবাদিকতায় নিয়োজিত ছিলেন। ১৯৭৪ সালে নারায়ণগঞ্জ পৌরসভার প্রথম নির্বাচনে নাজমা রহমানকে সংরক্ষিত নারী আসনে কমিশনার নির্বাচিত করা হয়।

স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন নাজমা রহমান। ১৯৮৬ ও ‘৯১ সালে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনে আওয়ামী লীগ তাকে মনোনয়ন দেয়। নব্বইয়ের এরশাদবিরোধী গণ-আন্দোলনের সময় ঢাকার পান্থপথে আওয়ামী লীগের একটি মিছিলে অংশ নেন অধ্যাপিকা নাজমা রহমান। ওই মিছিলে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস নিক্ষেপ করে। পরে বেদম লাঠিচার্জ করে।

একটি কাঁদানে গ্যাস সিলিন্ডার তার মাথায় এসে লাগে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে পড়ে যান। মাথার আঘাতটি ছিল বড় ধরনের ইনজুরি। চিকিৎসা নেওয়ার পর ভালো হয়ে যান । কিন্তু মাথার আঘাতটি তাকে মুক্তি দেয়নি। এরপর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে গ্রেনেড হামলায় তার পায়ে কয়েকটি স্পিন্টার আঘাত করে।